ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সারা বিশ্বে খাদ্য সংকট সৃষ্টি হতে পারে বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্থোনিও গুতেরেস। তিনি বলেন, ক্রমবর্ধমান দামের কারণে দরিদ্র দেশগুলো খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় পড়তে পারে।

বুধবার (১৮ মে) নিউ ইয়র্কে গুতেরেস একথা বলেন।

বিশ্বব্যাংক খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা মোকাবেলার জন্য ১২ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের তহবিল ঘোষণার দিনই জাতিসংঘ মহাসচিব এই মন্তব্য করলেন।

সম্প্রতি প্রকাশিত সংস্থাটির এক পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে আগামী মৌসুমে বিশ্বব্যাপী খাদ্যশস্যের মজুত দাঁড়াবে মোট ৫৮ কোটি ১০ লাখ টনে, যা চলতি বছরের হালনাগাদকৃত মজুতের তুলনায় ৪ দশমিক ৪ শতাংশ বা ২ কোটি ৭০ লাখ টন কম। চলতি বছরের শেষ নাগাদ খাদ্যশস্যের বৈশ্বিক মজুত ৬০ কোটি ৮০ লাখ টনে দাঁড়াবে। এ পূর্বাভাস সত্য হলে তা হতে যাচ্ছে ২০১৫ সালের পর সবচেয়ে কম বৈশ্বিক মজুত।

গুতেরেস বলেন, ইউক্রেনের রপ্তানি যদি যুদ্ধ-পূর্ব পর্যায়ে নিয়ে না যাওয়া হয় তাহলে বিশ্ব দুর্ভিক্ষের মুখোমুখি হতে পারে যা বছরের পর বছর ধরে চলতে পারে। যুদ্ধের কারণে যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশটির বন্দর থেকে সান ফ্লাওয়ার তেলের পাশাপাশি ভুট্টা এবং গমের মতো খাদ্যপণ্যের রপ্তানি সম্পূর্ণভাবে বন্ধ হয়ে গেছে। মূলত এই কারণে বিশ্বব্যাপী সরবরাহ (খাদ্য পণ্য) কমে যাওয়ায় বিকল্প পণ্য সমগ্রীর দাম বেড়েছে।

জাতিসংঘের মতে, বিশ্বব্যাপী খাদ্যের দাম গত বছরের এই সময়ের তুলনায় প্রায় ৩০ শতাংশ বেড়েছে।

গুতেরেস বলেন, যুদ্ধ সংঘাত লাখ লাখ মানুষকে খাদ্য নিরাপত্তাহীনতার কিনারায় নিয়ে গেছে। এর জেরে অপুষ্টি, ক্ষুধা এবং দুর্ভিক্ষের মতো মারাত্মক ঝুঁকি সৃষ্টি হচ্ছে।

জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, ‌আমরা যদি যৌথভাবে এগিয়ে আসি তাহলে পৃথিবীতে যথেষ্ট খাবার আছে। কিন্তু এই সমস্যা যদি আজই সমাধান না করি, তাহলে আমরা সামনের দিনগুলোতে খাদ্য ঘাটতির সম্মুখীন হবো।’

তিনি সতর্ক করে বলেন, ইউক্রেনের খাদ্য এবং রাশিয়া ও বেলারুশের সার বিশ্ব বাজারে না আসা পর্যন্ত খাদ্য সংকট সমাধানের আর কোনো সমাধান নেই।

গুতেরেস বলেন, খাদ্য রপ্তানি স্বাভাবিক স্তরে ফিরিয়ে আনার জন্য তিনি রাশিয়া এবং ইউক্রেনের পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে যোগাযোগ অব্যাহত রেখেছেন।